- শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪

| জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১ -

Tokyo Bangla News || টোকিও বাংলা নিউজ

প্রথমবারের মতো জাপানের সংস্কৃতির বিবরণ লিখেছেন বাংলাদেশি মাহমুদ জাকের

ষ্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:৫৮, ১৬ এপ্রিল ২০২২

প্রথমবারের মতো জাপানের সংস্কৃতির বিবরণ লিখেছেন বাংলাদেশি মাহমুদ জাকের

ছবি:দ্যা মাইনিচি

প্রথমবারের মতো জাপানের সংস্কৃতির বিবরণ লিখেছেন বাংলাদেশি মাহমুদ জাকের।৪৯ বছর বয়সী মাহমুদ তার আত্মজীবনীতে জাপানে বসবাসরত প্রায় ৩০ বছরের বর্ণনা  লিখেছেন। 

সারা বিশ্ব জুড়ে নানান দেশ, নানান মানুষ। গাত্রবর্ণের ভিন্নতা যাপিত জীবনেও। আচার আচরণে ভিন্নতা। নিজস্ব আলাদা সংস্কৃতি। কিন্তু বহু বিচিত্র সংস্কৃতির মাঝে অমিলও থাকে এক দেশের সাথে আরেক দেশের। জাপানি সংস্কৃতির সঙ্গে অভিবাসীদের সংস্কৃতির মেলবন্ধন থাকবে না এটাই স্বাভাবিক।জাপানে বসবাসরত প্রায় ৩০ বছরের বর্ণনায় এমনি সংস্কৃতির মিল-অমিলের কথাগুলোই লিখেছেন বাংলাদেশি মাহমুদ জাকের। 

বাংলাদেশি মাহমুদ জাকেরের জাপানি পাবলিক বাথের প্রথম দর্শন বইটি প্রকাশক গোমা শোবো শিনশা প্রকাশ করেছেন এবং এর মূল্য ১,৪৩০ ইয়েন (প্রায় $১১)।

মাহমুদ জাকের গ্রামবাংলার বাসিন্দা। বাংলাদেশ থেকে স্নাতক করার পর তিনি ১৯৯৪ সালে জাপানে আসেন তার বড় ভাইয়ের কাছে।জাকেরের বড় ভাই আগেই জাপানে এসেছিলেন এবং কাজ করছিলেন। 

মাহমুদ জাকের জাপানে আসার পর জাপানি ভাষায় অধ্যয়ন করেন এবং চিবা প্রিফেকচারের জোসাই ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মানবিক বিভাগ থেকে স্নাতক হন। তিনি বর্তমানে সুইতা ওসাকা প্রিফেকচারে থাকেন এবং ওসাকা-ভিত্তিক হাকুকিন রপ্তানি কোম্পানিতে কাজ করেন।এছাড়াও তিনি ওসাকা প্রিফেকচারাল পুলিশের জন্য বাংলা-জাপানি দোভাষীরও কাজ করেন।

জাপানে মাহমুদের প্রথম বাড়িতে গোসল করার ব্যবস্থা ছিল না তাই তিনি একটি পাবলিক বাথহাউসে গিয়েছিলেন গোসল করার জন্য।সেসময় তিনি হাফপ্যান্ট পরে স্নানে করতে গেলে বাথহাউস পরিচারকের বুথের একজন মহিলা তাকে স্নানে প্রবেশের আগে তার অন্তর্বাস খুলে ফেলতে বলেছিলেন।বিস্মিত মাহমুদ গোসল করার জন্য তার অন্তর্বাস খুলে ফেলতে প্রায় পাঁচ মিনিট নিজের সাথে নিজে বোঝাপড়া করেন কারণ বাংলাদেশে পরিবারের সদস্যদের সামনেও একজন পুরুষের নগ্ন হওয়া কল্পনাতীত ছিল।   

মাহমুদ সে দিনের কথা স্মরণ করে বলেন,"সেদিন আমি আমার চোখে জল দিয়ে গোসল করেছিলাম, কারণ আমার সমস্ত বিরোধপূর্ণ অনুভূতিগুলি চোখের জল হয়ে বের হয়ে এসেছিল। তারপর হেসে বলেন, এরপর আমার গর্বও দূর হয়ে গেল এবং আমি নতুন মানুষ হয়ে উঠলাম।" 

এমনকি জাপানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পরেও মাহমুদ বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে মূল্যবোধ এবং সাংস্কৃতিক পার্থক্যের সম্মুখীন হন, যার মধ্যে রয়েছে শ্রম অনুশীলন, অ্যালকোহলের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং নারী সম্পর্কিত ধারণা। তিনি তার বইয়ের পাতায় এসবই লিখেছেন।

করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালীন সময় সংগ্রামরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সমর্থন করার সময় কেউ তার সমস্ত অভিজ্ঞতা লেখার পরামর্শ দেওয়ার পরে বইটি লিখেন তিনি।মাহমুদ বলেন, "আমি খুশি হব যদি এই বইটি মানুষের বিভিন্ন সংস্কৃতি বোঝার বিষয়ে চিন্তা করার মাধ্যম হয়ে ওঠে।"  

আর সি