- মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪

| জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১ -

Tokyo Bangla News || টোকিও বাংলা নিউজ

জাপানে কমছে মানুষ,বাড়ছে ‘ভুতুড়ে’ বাড়ি, অনেক বাড়ি দিচ্ছে ফ্রিতে

ষ্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০৮:০০, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২

জাপানে কমছে মানুষ,বাড়ছে ‘ভুতুড়ে’ বাড়ি, অনেক বাড়ি দিচ্ছে ফ্রিতে

জনসংখ্যা রেকর্ড হারে কমে যাওয়ার ফলে জাপানে দিনকে দিন বাড়ছে ভুতুড়ে বাড়ির সংখ্যা। ২০১৮ সালের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, জাপানের ১৩.৬ শতাংশ অঞ্চল পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছিল। আরও একটি সমীক্ষা বলছে, ২০৪০ সাল নাগাদ পরিত্যক্ত সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে যা দাঁড়াবে, তার মিলিত হিসাব মধ্য ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ার সমান হবে।
এই পরিত্যক্ত সম্পত্তির ভবিষ্যৎ নিয়েই উদ্বিগ্ন জাপান। এগুলিকে কী ভাবে কাজে লাগানো যায় সেটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জাপানের কাছে।কেন এ রকম পরিণতি হতে চলেছে জাপানের? বিশেষজ্ঞদের মতে, দু’টি কারণের মিলিত প্রভাব পড়ছে জাপানের উপর। এক, ক্রম হ্রাসমান জনসংখ্যা এবং দুই, কর্মসূত্রে তরুণ প্রজন্মের অন্যত্র চলে যাওয়ার প্রবণতা।জনসংখ্যার হ্রাস জাপানের কাছে গত কয়েক বছর ধরে খুবই উদ্বিগ্নতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।২০১৮ সাল নাগাদ চার লক্ষ ৪৯ হাজার জনসংখ্যা কমে যায় জাপানের। ২০২২ সালেও এর ধারাবাহিকতা ছিল পূর্বের গতিধারায়ই। তবে ১৯৬৮ সাল থেকে যদি এই জনসংখ্যার হ্রাসের হিসাব কষা হয় তা হলে ২০১৮ ছিল সর্বাধিক হ্রাস।ওই সমীক্ষা আরও একটি তথ্য সামনে তুলে ধরেছিল। সেই অনুযায়ী, ১৯৬৮ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত অন্তত ১০ লক্ষ জনসংখ্যা হারিয়ে ফেলেছিল জাপান। এর সঙ্গে দোসর হযে দাঁড়িয়েছে জাপানের ক্রমাগত জন্মহারের হ্রাস পাওয়া। তার উপর কর্মসূত্রে তরুণ প্রজন্ম অন্য দেশে পাড়ি দিতে শুরু করায় এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়।

পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, জাপানের বহু বাড়ি আজ পরিত্যক্ত। সেই সমস্ত বাড়ির মালিকের কোনও খোঁজ নেই। বহু খুঁজেও বাড়ির কোনও দাবিদারের সন্ধান মেলেনি। ফলে সেই সমস্ত বাড়ি দীর্ঘ দিন পড়ে থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
জাপানের আইন অনুযায়ী, পরিত্যক্ত সম্পত্তি সহজে সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে না। সেই সমস্ত সম্পত্তি চাইলেই যে কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না। সে কারণেই ওই সমস্ত সম্পত্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন জাপান। সেগুলিকে কাজে লাগানোর পরিবর্তে ফেলে রাখতে হচ্ছে নষ্ট হওয়ার জন্যই।

টোকিও'র টোয়োশিমা-কু শহরের প্রশাসন এই সমস্যামুক্তির একটি উপায় বার করেছে। পরিত্যক্ত বাড়ি কিনে কেউ সংস্কার করতে চাইলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে ভর্তুকি দেওয়া হবে। টোয়োশিমার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু অঞ্চলের প্রশাসনও ভর্তুকির নিয়ম চালু করেছে।

টোকিও থেকে ঘণ্টা দুয়েক দূরত্বে থাকা ওকোসুকা-র প্রশাসন বাড়ি বিক্রির জন্য আলাদা করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে। পুরনো বাড়ি কিনতে ইচ্ছুকদের জন্য খুব সস্তায় বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।

বাংলা টাকায় মাত্র সাত লাখ টাকাতেই জমি-সহ আস্ত বাড়ি কেনার সুযোগ পাবেন ইচ্ছুকরা। শুধু শর্ত একটাই। যিনি বা যাঁরা ওই বাড়ি কিনবেন তাঁদের ১৮ বছরের নীচে সন্তান থাকতে হবে। এলাকায় কম বয়সিদের কমতে থাকা সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। 

এত কিছুর পরও জাপান আবার আগের মতো প্রণোচ্ছ্বল হয়ে উঠবে কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছে না।

 

 

 

আর এ