বিশ্ব থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস নির্মূল সম্ভব মনে করছে জাতিসংঘ।বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলো যদি প্রাণঘাতী রোগ এইডসের ওষুধ-টিকা আবিষ্কার ও বৈশ্বিক জনসচেতনতা খাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করে, সেক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই বিশ্ব থেকে এইডসের নির্মূল সম্ভব বলে মনে করছে জাতিসংঘ।বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান এইডস নির্মূল বিষয়ক জাতিসংঘের বৈশ্বিক প্রকল্প ইউএনএইডসের নির্বাহী পরিচালক উইনি বায়ানিমা।
প্রকল্পের গত ৮ বছরের কার্যক্রমের সাফল্য তুলে ধরে উইনি বায়ানিমা বলেন, বৈশ্বিক দাতা দেশ ও সংস্থাগুলো এগিয়ে এলে পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে চিরতরে এইডসের অভিশাপমুক্ত করা সম্ভব।
তিনি বলেন, এইডস এখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রতিরোধ অভিযান যে পর্যায়ে রয়েছে—তাতে বৈশ্বিক দাতা দেশ ও সংস্থাগুলো এগিয়ে এলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে চিরতরে এইডসের অভিশাপমুক্ত করা সম্ভব। আর যদি তা না হয়, সেক্ষেত্রে আরও কয়েক দশক অপেক্ষা করতে হবে।
উইনি বায়ানিমা বলেন, ২০১৫ সালে ইউএনএইড নামের এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই প্রকল্পটির লক্ষ্য ছিল ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে এইডসমুক্ত করা।
অনিরাপদ যৌনতা, সিরিঞ্জের সূঁচের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে এইচআইভি ভাইরাস। এছাড়া, মায়ের মাধ্যমেও এইডসে আক্রান্ত হয় শিশুরা। কোনো গর্ভবতী নারীর দেহে এইডসের জীবাণু থাকলে তা অনাগত সন্তানকেও সংক্রমিত করে।
ইউএনএইডসের প্রতিবেদন অনুসারে,২০২২ সালে বিশ্বে এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ লাখ মানুষ এবং এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ লাখ ৩০ হাজার জন।
প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক উইনি বায়ানিমা বলেন,গত দুই দশকের পরিসংখ্যান বিচার করার পর আমরা দেখতে পাচ্ছি, ২০০৪ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে এইডস সংক্রমণের হার হ্রাস পেয়েছে ৬৯ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, এইডস রোগের জন্য হিউম্যান ইমিউনো ভাইরাস (এইচআইভি) নামের বিশেষ একটি ভাইরাস দায়ী। মানবদেহে এই ভাইরাসটি প্রবেশ করলে সেটি মানুষের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও প্রতিরক্ষাকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে এইডস রোগী খুব সহজেই যেকোনো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন, যা শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু ঘটাতে পারে।
বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের তুলনায় আফ্রিকার সাব সাহারা, পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের এইডসের প্রকোপ বেশি।আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, বিশ্বের বেশিরভাগ এইডস রোগী দেখা যায় বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, রুয়ান্ডা, তানজানিয়া ও জিম্বাবুয়েতে।আফ্রিকার এই ৫ দেশের মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশই এইডসে আক্রান্ত।
উল্লেখ্য,১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এইডসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ওই বছরই দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) এই রোগের জন্য দায়ী ভাইরাস এইচআইভিও শনাক্ত করে।
আর সি