
প্রথমবারের মতো ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনশুমারি শুরু হলো বাংলাদেশে।স্থানীয় সময় বুধবার গণভবন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।করোনাভাইরাস মহামারিসহ বিভিন্ন কারণে কয়েক দফা পেছানোর পর আজ শুরু হলো কাঙ্ক্ষিত ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’।
এবারের শুমারিতে ডিজিটাল ডিভাইস ট্যাবলেট ব্যবহার করে কম্পিউটার অ্যাসিসটেড পারসোনাল ইন্টারভিউং (সিএপিআই) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। সহজে ও সুনির্দিষ্টভাবে শুমারির গণনা এলাকা চিহ্নিতকরণ এবং কোনো খানা গণনা থেকে বাদ না পড়া বা একাধিকবার গণনা না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) ও গুগল সমন্বয় করে ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ম্যাপ ব্যবহার করে সাময়িকভাবে নিযুক্ত গণনাকারীরা প্রায় তিন লাখ ৭০ হাজার নির্ধারিত গণনা এলাকার প্রতিটি বাসগৃহ, খানা ও ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করবেন।
ডিজিটাল এ শুমারি বাস্তবায়নে সারাদেশে একযোগে তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যবহার হবে তিন লাখ ৯৫ হাজার ট্যাবলেট। মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে ব্যবহৃত ট্যাবলেটসমূহ মোবাইল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট (এমডিএম) সফটওয়্যার ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এছাড়া মাঠপর্যায় থেকে সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে গাজীপুর কালিয়াকৈরে স্থাপিত বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) টায়ার আইভি সিকিউরিটি সমৃদ্ধ ডেটা সেন্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। মাঠপর্যায় থেকে বিডিসিসিএল হয়ে বিবিএস সার্ভারে আসার পূর্ব পর্যন্ত সংগৃহীত সব তথ্য-উপাত্ত গোপন অবস্থায় থাকবে, যার মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এছাড়া একটি ওয়েবভিত্তিক ইন্টিগ্রেটেড সেনসাস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইসিএমএস) প্রস্তুত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে শুমারির যাবতীয় কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। তাছাড়া এর মাধ্যমে মাঠপর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম রিয়েল টাইম মনিটর করা হবে। সর্বোপরি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের ফলে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ সহজতর হবে এবং স্বল্পতম সময়ে শুমারির প্রতিবেদন প্রকাশ সম্ভব হবে।
সপ্তাহব্যাপী এ শুমারি চলবে ২১ জুন পর্যন্ত। এটি দেশের ষষ্ঠ জনশুমারি। দেশের মোট জনসংখ্যা এখন কত, তা জানতেই মূলত রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, বাসস্ট্যান্ডসহ দেশে এ ধরনের স্থানগুলোতে ভাসমান মানুষ গণনাসহ তাদের সম্পর্কে মৌলিক জনমিতিক, আর্থ-সামাজিক ও বাসগৃহসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের মধ্যদিয়ে শুরু হবে জনশুমারি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) আওতায় এ শুমারির মূল তথ্যসংগ্রহ শুরুর আগে সার্বিক বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন চত্বরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন সার্বিক বিষয়ে উপস্থাপনা করেন।
প্রসঙ্গত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালে প্রথম আদমশুমারি ও গৃহগণনা পরিচালিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ বছর পরপর ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১ এবং ২০১১ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ এবং পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য,শুমারিতে সঠিক তথ্য প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক গান, নাটক, ডকুড্রামা, শুমারি কাউন্টডাউন, ডকুমেন্টারি দেশের সব সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমে প্রচার করা হবে। জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে স্থানীয় ক্যাবল টিভিতে জনশুমারি প্রচার, প্রচারসামগ্রী বিতরণ, ডকুমেন্টারি প্রচারসহ শুমারি চলাকালে মাইকিং করা হবে।
আর সি