- শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪

| জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১ -

Tokyo Bangla News || টোকিও বাংলা নিউজ

টোকিওতে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও বিজয় দিবস পালন

ষ্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৪:১৬, ২০ ডিসেম্বর ২০২১

টোকিওতে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও বিজয় দিবস পালন

ছবি:টোকিও বাংলা নিউজ

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কানসাই জাপান শাখা কর্তৃক আয়োজিত সুবর্ণজয়ন্তীর ৫০ বছর ও মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। 

রবিবার টোকিওস্থ আকাবানের বিবিও হলে এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কানসাই বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু সাহদাত মোহাম্মদ সায়েম এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন অর রশিদ। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ নিহত পরিবারের প্রত্যেকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

শুভেচ্ছা বক্তৃতায় কানসাই আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ হারুন অর রশিদ বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। 

বাংলাদেশ পাক হানাদারদের সাথে মাত্র ৯  মাসে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করে যা কষ্টার্জিত হলেও পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম বিরল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অনলাইনে বাংলাদেশ থেকে প্রধান অতিথি হিসাবে আলোচনা সভায় অংশ নেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, এমপি। তিনি তার বক্তৃতায় স্বাধীনতা অর্জনে জাতির পিতার দূরদর্শী নের্তৃত্ব, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত আত্মত্যাগ এবং আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে রূপকল্প ২০২১, রূপকল্প ২০৪১ ও ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। 

তিনি বলেন, এ বছর নভেম্বর মাসে স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটেগরি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য আমরা জাতিসংঘের চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছি যা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের মর্যাদা ও সক্ষমতার স্বাক্ষর।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের অর্জনসমূহ উপস্থাপন করে তিনি জাতির পিতার সমৃদ্ধ সুখী-সমৃদ্ধ বৈষম্যহীন সোনার বাংলা বাস্তবায়নে প্রবাসীদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি তার বক্তৃতায়।

অনলাইনের মাধ্যমে অংশ নেয়া বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় কমিটির ত্রান ও সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, আমাদের সবার উচিত দেশের ইতিহাস জানা। বর্তমান তরুণ ও নতুন প্রজন্মের অনেকেই আমাদের গৌরবময় সোনালি ইতিহাস ভালো করে জানে না। প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চির সমুন্নত রাখা ও নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সঠিক চিত্র তুলে ধরার জন্য তিনি প্রবাসী বসবাসবাসরত ভাই বোনদের প্রতি আহ্বান জানান। 

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসাবে অনলাইনে অংশগ্রহন করেন বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক কবিরুল ইসলাম শিকদার। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মহান ত্যাগ ও আত্মদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের এই বীরগাঁথা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।

এ ছাড়া আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মহান বিজয় দিবস নিয়ে আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন কানসাই বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ শাখার উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য আমিনুল ইসলাম রহমান, ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ-উল-হাসান ,ড. লুৎফর রহমান মাসুম, প্রাক্তন ছাত্র নেতা ড. মো: আশরাফুজজামান রোমেল,  ড. বজলুল রশীদ হিরা, সহ সভাপতি মোঃ হারুন অর রশিদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মাহফুজুল করিম,কানসাই যুবলীগের সাধারন সম্পাদক জনাব শামীমুল আজাদ রাজু, জাপান ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফকরুল ইসলাম দিদার ও ওসাকা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত হোসেন সাকিব। 

বক্তাগন তাদের বক্তব্যে মহান বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বিজয়ের আনন্দ এই প্রবাসে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।  

সমাপনী বক্তৃতায় সভাপতি জনাব আবু সাদাত মো: সায়েম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতাসহ ১৫ আগস্ট ঘাতকের হাতে শহীদ জাতির পিতার পরিবারের সব সদস্য, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। 

তিনি জাপান প্রবাসী বাংলাদেশিদের মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রম ও গতিশীল নেতৃত্বের ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ বিশ্বের জন্য মডেল। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় তিনি সবাইকে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার এবং জাপানে বাংলাদেশের মর্যাদা অটুট রাখার আহ্বান জানান।

আলোচনা সভা শেষে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ, জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের জন্য এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয় এবং বিজয়ের সুবর্ন জয়ন্তী উপলক্ষে কেকে কাটা হয়।  

পরিশেষে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়।

আর এ/আর এ এস